প্রকাশিত: Sun, Jun 30, 2024 2:55 PM
আপডেট: Tue, Apr 29, 2025 11:35 PM

সাদেক অ্যাগ্রোকেও এনবিআরের তদন্তে আনতে হবে

রবিউল আলম : ছাগল ক্রেতা ইফাত, বাবা সরকারি অফিসার, অর্থের উৎস খোঁজা সহজ। দুর্নীতির কথা আর নতুন করে বলতে হবে না। ইতিমধ্যে গুষ্টির পর গুষ্টির ইতিহাস বের হচ্ছে। বাবা তার ছেলেকে অস্বীকার করেও রেহাই পাচ্ছে না, সঙ্গে যুক্ত হয়েছে সংসদ সদস্য নিজাম হাজারীর মামাতো বোনের জামাই। ছাগল বিক্রেতার, সাদেক এ্যাগ্রোর মালিক ইমরান হোসেনের দুর্নীতির নিয়ে মিডিয়া সোচ্চার হলেও অনেক দুর্নীতির সন্ধান এখনো অজানা। ব্রাহাম গরু আমদানি, প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের জাল সার্টিফিকেট প্রমাণ করে কী পরিমাণ ভুল পথে বাংলাদেশের প্রাণিসম্পদ উন্নয়নকে বাধাগ্রস্ত করেছে। 

মুসলিমদের ধর্মীয় অনুভূতিকে পুঁজি করে, দুর্নীতিবাজ আমলা, রাজনৈতিক নেতাদের কালো টাকা সাদা করার কারখানা হতে পারে সাদেক এ্যাগ্রো। এনবিআরের তদন্তে অনেক অজানা তথ্য বেরিয়ে আসবে। তবে আমাদের সাদা চোখে যা-কিছু দেখতে পেয়েছি, তা বিস্ময়কর। সাদেক এ্যাগ্রো সরকারি খালে ময়লা আবর্জনা ফেলে একাকার, কোরবানির মাংস বানানোর জন্য নিজস্ব জবাইখানা করে নিয়েছে। সিটি কর্পোরেশনকে কোনো রাজস্ব দেওয়া হয় না, অনুমতি নেওয়ার প্রয়োজন মনে করেনি। কোরবানির পশু বিক্রির জন্য সরকারকে ৫ শতাংশ রাজস্ব দিতে হয়, সাদেক এ্যাগ্রোসহ কোনো এ্যাগ্রো সরকারি রাজস্ব দিচ্ছে না। অথচ এই এ্যাগ্রোগুলোর মলমূত্র ও পশুখাদ্যের আবর্জনা পরিস্কার পরিচ্ছন্নের দায়িত্ব পালন করতে হয় সিটি কর্পোরেশন, পৌরসভা, ইউনিয়ন পরিষদকে।  সাদেক এ্যাগ্রো এখন বংশ পরিচয়ের পশু বিক্রি করে, কোটি টাকার পশু। পাঁচ থেকে দশ হাজার পশু বিক্রেতা ইমরান হোসেন, শাহা মোহাম্মদ ইমরান, ফার্মার এসোসিয়েশনের সভাপতি, সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব পালন করছে। কতো টাকার পশু বিক্রি, কতো টাকার রাজস্ব হারাচ্ছে সরকার? এনবিআরের দায়িত্ব  খুঁজে বের করা। সাদেক এ্যাগ্রো জবাবদিহিতার ঊর্ধ্বে থাকতে পারে না। সঙ্গে যুক্ত করতে হবে, সরকারি জমি দখল। ঢাকার শহরে পশুপালনের অনুমতি কোন মন্ত্রণালয়ের, পরিবেশ, স্থানীয় ও সিটি করপোরেশনের  ছারপত্র নিয়েছেন কিনা?  এই রকম আমলা মতিউর রহমান আর কতোজন সাদেক এ্যাগ্রোতে কালো টাকা সাদা করছে, তদন্তে বেরিয়ে আসবে অনেক রাজনৈতিক নেতার নাম,  কীভাবে সরকারি ফার্মের গরু আত্মসাৎ করে, কোটি কোটি টাকা সরকারের কাছ থেকে ভর্তুকি আদায় করে রমজানের ন্যায্য মূল্যের মাংস বিক্রি করে, সাদেক এ্যাগ্রো? 

প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের দুর্নীতিবাজ কর্মকর্তাদের কীভাবে খুশি রাখে? তদন্তে সব বেরিয়ে আসবে। সাদেক এ্যাগ্রোর ছাগলামি প্রচার করছে সুবিধাভোগী ইউটিউবারা, শাক দিয়ে মাছ ডাকার মতো। কোটি টাকার মদ ও গাড়ির নাকি হিসেব নেই। আল্লাহর জন্য কোরবানির, এতো হিসেব? ইমরান সাহেব হয়তো জানেন না, গাড়ি ও মদের জন্য ২২০ শতাংশ রাজস্ব আদায় করা হয়। আপনি কোরবানির পশুর মাত্র ৫ শতাংশ রাজস্ব আত্মসাৎ করে দেশ ও জাতিকে ধ্বংসের পথে নিয়ে যাচ্ছেন। কোটি টাকার গরু, লাখ টাকার ছাগল কোরবানি দাতা ও বিক্রেতাকে এনবিআর হিসেবের আওতায় আনলে গরুর সু-রুম সাদেক এ্যাগ্রোরা দানাদার খাদ্য, বিষযুক্ত ইরিয়া সার দিয়ে পশুপালন বন্ধ করতে বাধ্য হবে। ফ্যাটযুক্ত কোরবানির পশু স্বাস্থ্য সচেতনতার প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করছে। স্বাস্থ্য ঝুঁকি এড়াতে আইনের সবকটা দরজা জানালা খোলা রাখতে হবে। লেখক: মহাসচিব, বাংলাদেশ মাংস ব্যবসায়ী সমিতি